মালয়েশিয়ায় প্রতিশ্রুত চাকরি না পাওয়া ৭৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক অবশেষে পাচ্ছেন তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ। কুয়ালালামপুরের শ্রম অফিস দেশটির কোম্পানি মেরান্তি বিনামাস এসডিএন বিএইচডি–কে এক দশমিক ৫৪ মিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা) পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে।চুক্তি ভঙ্গ, কাজ ছাড়া কাটে মাসের পর মাসভুক্তভোগী শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, মালয়েশিয়ায় আসার আগে প্রত্যেকেই ২৫ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত খরচ করেন। কিন্তু দেশটিতে পৌঁছানোর পর কোনো কাজ কিংবা মজুরি দেওয়া হয়নি। তাদের রাখা হয় কুয়ালালামপুরের পুডু এলাকার এক জনাকীর্ণ হোস্টেলে।বিচারের পথে নেতৃত্ব দেয় ‘তেনাগানিতা’শ্রম অধিকার সংগঠন তেনাগানিতা শ্রমিকদের হয়ে এই অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করে। তাদের সহায়তায় দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে শ্রম অধিদপ্তর এই রায় ঘোষণা করে।তেনাগানিতা’র প্রতিনিধি আব্দুল আজিজ ইসমাইল বলেন—“এটি শ্রমিক অধিকারের লড়াইয়ে একটি বড় বিজয়। এই রায়ের মাধ্যমে নিয়োগকর্তাদের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, দায়মুক্তির সুযোগে শোষণ চলবে না।”তিনি আরও বলেন,“শ্রমিকেরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন, তাহলে প্রভাবশালী কোম্পানিরাও দায় এড়াতে পারবে না।”আরও একটি মামলা চলমান শাহ আলম হাইকোর্টেএদিকে, পৃথকভাবে ৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়ার শাহ আলম হাইকোর্টে একটি মামলা করেছেন, যার ক্ষতিপূরণ দাবি ১.৭১ মিলিয়ন রিঙ্গিত।এই মামলায় মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল, অভিবাসন মহাপরিচালক এবং মালয়েশিয়া সরকারকেও বিবাদী করা হয়েছে।২০২৫ সালের মার্চে দায়ের করা মামলাটি এখনো বিচারাধীন।শ্রমিক অধিকার আন্দোলনে নতুন দৃষ্টান্তঅভিবাসন সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ক্ষতিপূরণ আদায়ের রায় মালয়েশিয়ায় কর্মরত অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ন্যায়বিচারের এক নতুন মাইলফলক। এটি ভবিষ্যতে নিয়োগকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার পাশাপাশি বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের সাহস ও প্রেরণা যোগাবে।